রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: চীন থেকে বাংলাদেশে আসছে সিনোফার্মের আরও ৫৪ লাখ ডোজ টিকা। বাংলাদেশের কেনা এই টিকা আগামীকাল শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছাবে।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালং ইয়ান।
দূতাবাস কর্মকর্তা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীন সবসময় নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী হয়ে থাকবে। আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুদের যখন যা প্রয়োজন হবে চীন তাই সরবরাহ করবে।’
গত ১২ মে প্রথমবার সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল চীন। এরপর কয়েক দফায় বিশ্ব উদ্যোগ কোভ্যাক্সের আওতায় উপহার এবং বাংলাদেশের কেনাসহ এখন পর্যন্ত চীন থেকে সিনোফার্মের মোট এক কোটি ৮১ লাখ ৬১ হাজার ৮০১ ডোজ টিকা দেশে এসেছে।
এদিকে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে করোনাভাইরাসের টিকার যে চুক্তি বাংলাদেশ করেছিল সেই টিকা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ভারত সফর শেষে ফিরে মন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশটি তাদের টিকার সংকট কাটিয়ে উঠেছে। আগামী অক্টোবর থেকেই তারা টিকা রপ্তানি শুরু করতে পারে।
শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশি কাঁচামালের অপ্রতুলতার কারণে টিকা উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কথা জানান, যা বছরের শেষ চতুর্ভাগ অর্থাৎ অক্টোবর-ডিসেম্বরে তারা কাটিয়ে উঠবে। আশা করি, ভারতে টিকা উৎপাদন জোরদার হলে তারা বাংলাদেশে চুক্তির টিকা সরবরাহে সক্ষম হবে।’
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে শুক্রবার পর্যন্ত তিন কোটি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৩ ডোজ টিকার প্রয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন দুই কোটি চার লাখ ৩৭ হাজার ১১৪ এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এক কোটি ৩২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫৯ জন।
এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ এক কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৪৬ আর নারী ৮৮ লাখ ১০ হাজার ৫৬৮ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ লাখ ২৮ হাজার ৮১০ আর নারী ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪৯ জন।
এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড প্রয়োগ হয়েছে এক কোটি ২২ লাখ চার হাজার ১৪৫ ডোজ। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ হয়েছে এক লাখ ৯১১ ডোজ। চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ হয়েছে এক কোটি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮৬ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ হয়েছে ৪৬ লাখ ১৯ হাজার ৭৩১ জন।
দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তবে কিছু দিন চলার পর টিকা সংকটের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সঠিক সময়ে না পাওয়ার কারণে দেশে টিকার সংকট দেখা দেয়। দেশে এখন চারটি কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক, মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা।
সরকার বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ প্রায় ছয় কোটি টিকা দেশে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।